মাধবপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে কমলপুর হযরত শাহজালাল আলিম মাদরাসা
হামিদুর রহমান, মাধবপুর (হবিগঞ্জ) থেকে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ৩:১২ মিনিট
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়াচেছ কমলপুর হযরত শাহজালাল (রঃ) আলিম মাদরাসা। এ বছর দাখিল পরীক্ষায় ৩০ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে শতভাগ পাশ করেছে। জিপিএ -৫ পেয়েছে ৮ জন, এর মধ্যে ৭ জন নারী শিক্ষার্থী। ২০১৪ সালে মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের আনিসুর রহমান আদিল নামে এক ব্যাক্তি তার নিজের জায়গায় গড়ে তুলেন এই শিক্ষা প্রতিষ্টানটি। প্রতি বছর এই মাদারাসা শত ভাগ পাশ করেন জেলায় বেশ সুনাম খুড়িয়েছে। মাদরাসা শিক্ষায় এনেছেন আধুনিকতা। রয়েছে কম্পিউটার ল্যাব। বিজ্ঞান গবেষনাগার। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে রয়েছে ২২ জন শিক্ষক ও ৪১৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থী খোকন মিয়া জানান, ২০২২ বর্ষের দাখিল পরীক্ষায় তিনি জিপিএ ৫ পেয়েছেন। নবম শ্রেণীতে তিনি ৩ পেয়েন্ট পেয়েছিল। তিনি কখনো আশা করেনি ৩ পেয়েন্টের ছাত্র এ প্লাস পেতে পাবে। এই মাদ্রাসার শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এ প্লাস পেয়েছে। এই মাদ্রাসার দূরবর্তী ছাত্ররা পড়াশুনা করতে পারে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এখানে আইসিটি ল্যাব আছে। বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স কাজও শিখানো হয়। এখানে পড়ালেখার মান অত্যান্ত ভাল।
বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থী নাঈমা আক্তার জানান,এখানে মেয়েদের অনেক পর্দাসহকারে লেখাপড়া করানো হয়। মাদরাসায় কোন সমস্যার সৃষ্টি হয় না। যদিও কোন সমস্যা হয় শিক্ষকরা দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। এখানে কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে। ছেলে মেয়েরা কাজ করতে পারে। সে গনিতে এক শত মার্কের মাঝে একশত মার্ক পেয়েছে। এটার জন্য অনেক অবদান শিক্ষকদের। বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থী রাইহানা আক্তার জানান,এই মাদ্রাসায় যারা শিক্ষক রয়েছেন উনারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে পড়ান। মেয়েরা এখানে অনেক পর্দাশীল ভাবে চলাফেরা করে। অনেক দুর দূরান্ত থেকে মেয়েরা এখানে আসে এবং থেকে পড়াশুনা করে। তিনি জিপিএ ৫ পেয়েছে , এতে পরিবারের সাপোর্ট এর পাশাপাশি শিক্ষক , শিক্ষিকার অক্লান্ত পরিশ্রম রয়েছে বলে মনে করেন। আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, মাদ্রাসার এই বছর ৮ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। তার মধ্যে ৭জন মেয়ে , ১ জন ছেলে। এই মাদ্রাসার সব ধরনের সুবিধা রয়েছে। মেয়েরা পর্দাসহকারে পড়াশুনা করে। কোন ধরনের সমস্যা এখনে হয় না। যদি হয় শিক্ষকরা দ্রত ব্যবস্থা নেয়। মাদ্রাসায় কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে।
আমিনুল ইসলাম ভুট্রো নামে স্থানীয় এক ব্যাক্তি জানান, চৌমুহনী ইউনিয়নে কোন মাদ্রাসা ছিল না। গত এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দেখে খুবই আনন্দিত হয়েছেন। এই প্রতিষ্টানটি সরকারের অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। যদি সরকারের সুদৃষ্টি থাকে এখানে তাহলে এই প্রতিষ্টান আরো উন্নতি হবে। মাদ্রাসার ভাইস পেন্সিপাল মাসুদুর রহমান জানান,সরকার কে ধন্যবাদ। কমলপুর হযরত শাহজালাল মাদ্রাসা ২০১৪ সালে প্রতিষ্টিত হয়। প্রতিষ্টার পর থেকেই মাধবপুর উপজেলার মধ্যে ভাল ফলাফল করে আসছে। এ বছর ২০২২সালে সেরা ফলাফল হয়েছে। এই প্রতিষ্টানে ২২ জন শিক্ষক রয়েছেন। ৪ শ উপরে ছাত্র- ছাত্রী এখানে অধ্যায়নরত আছে। এখানে ছেলে মেয়ে দুটি সহ শিক্ষা আছে। তাদের কে পৃথক ভাবে পড়াশুনা করানো হয়। এখানে অভিভাবকদের মতামত নেওয়া হয়। এখানে শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা জন্য যত ধরনের প্রচেষ্টা প্রয়োজন সব গুলোই করা হচ্ছে। এ বছর শেখ রাসেল ল্যাব পাওয়া গেছে। ১৭ টি ল্যাপটপ রয়েছে। ২ শিটপে ছেলে মেয়েদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিজ্ঞান প্রযুক্তির সঙ্গে মিলিয়ে তাদের এই প্রতিষ্টানটি বাংলাদেশের মধ্যে দাঁড়িয়ে যাবে। মাদ্রাসার প্রতিষ্টাতা ও অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান আদিল জানান, আমাদের মাদ্রাসায় এ বছর ৩০ জন পরীক্ষাথীর মধ্যে ৮ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। আমরা আশাবাদি ২০২৫ সাল নাগাদ এই প্রতিষ্টান শতভাগ এ প্লাস পাবে। এই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এখানে মেয়েদের ও ছেলেদের হোস্টেল আলাদা , আলাদা আছে। ছেলে মেয়েদের আলাদা ক্লাস নেওয়া হয়। প্রতিষ্টানে শিক্ষক রয়েছে ২২ জন। শিক্ষার্থী রয়েছে ৪১৭ জন। আমরা আশাবাদি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যদি টিক মত চালিয়ে যেতে পারি আগামীতে একটা ভাল ফলাফল হবে। এ বছর ৩০ জন ছাত্রের মধ্যে ২৫ জন গনিতে এ প্লাস ও ১৭ জন ইংরেজিতে এ প্লাস পেয়েছে। এখানে স্টুডিও , আইসিটি ল্যাব ও সেলাই মেশিনের কাজও শিখিয়ে দেওয়া হয়। ছাত্র – ছাত্রীদের আমরা নিজ দায়িত্বে আধুনিক বিশে^র সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া হচেছ। ছাত্রদের উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যে দিয়ে অতি যত্নের সহকারে পড়ানো হয়।
হবিগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল্লাহ্ জানান, উপজেলা ভিত্তিক দাখিল পরীক্ষার ফলাফলে অত্যান্ত চমৎকার একটি রেজাল্ট করেছে। তাদের জিপিএ ৫ সংখ্যাটা উপজেলার মধ্যে অনেক ভাল । লেখাপড়ার নিয়ম কানুনের দিক থেকেও পুরাতন মাদ্রাসা না হলেও অল্প সময়ে এগিয়ে যাচ্ছে। নতুন কারিকুলামের আলোকে আমাদের বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা তাও যেন বাস্তবায়িত হয় ,আধুনিক শিক্ষায় আরেকটু দক্ষ হয়ে উঠে এই ব্যাপারে আমরা আমাদের জেলা ও উপজেলা থেকে মনিটরিং করছি। তাদের কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। সব সময় আমাদের সহযোগীতা তাদের জন্য আছে এবং থাকবে। মাদ্রাসার সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই কে ভাল রেজাল্টের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জেলা শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে।