সৌদিতে চাকরির প্রলোভনে প্রতারণা, বড়লেখায় ২ আসামী কারাগারে
বড়লেখা প্রতিনিধি :
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ৮:১৩ মিনিটমৌলভীবাজারের বড়লেখায় শরিফ উদ্দিন নামক এক যুবককে ভাল চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সৌদিআরবে পাঠিয়ে প্রতারণার অভিযোগ মামলায় বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দুই আদম বেপারিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। সমন পেয়ে মঙ্গলবার জামিন নিতে আদালতে হাজির হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জিয়াউল হক প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী শরিফ উদ্দিনের বাবা আমির উদ্দিনের দায়েরকৃত মামলার দুই নম্বর আসামী হুমায়ুন আহমদ ও চার নম্বর আসামী আলী আজাদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মো. ইয়াছিন আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, আদম বেপারি শাহজাহান কবির খোকন ও তার ভাই হুমায়ুন আহমদ ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রতারণার শিকার যুবক শরিফের বাবা আমির উদ্দিনকে প্রস্তাব দেন ভাল ভিসা দিয়ে তারা শরফিকে সৌদিআরব পাঠাতে পারবেন। মাসে ৫০ হাজার টাকা বেতন হবে। তাদের সাথে মামলায় অভিযুক্ত মোস্তাব উদ্দিন ও আলী আজাদও একই প্রস্তাব দেন। এতে আমির উদ্দিন রাজি হন। এরপর তাদের মধ্যে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকার চুক্তি হয়। আমির উদ্দিন ছেলেকে সৌদি পাঠানোর জন্য চুক্তি অনুযায়ী কয়েক দফায় টাকা পরিশোধ করেন। এছাড়া বিভিন্ন কাজের কথা বলে আরও প্রায় ১ লাখ ৭০ টাকা নেওয়া হয়। এরপর ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি শরিফ উদ্দিনকে সৌদিআরব পাঠানো হয়। সেখানে পৌঁছার পর শরিফকে শাহজাহান কবির খোকনের লোকজন রিসিভ করে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শরিফ সেখানে কোন লোক পাননি। শাহজাহান কবির খোকনের মোবাইলে ফোন দিলেও তাকে পাননি। অনাহারে-অর্ধাহারে এয়ারপোর্টে তিনদিন কাটে শরিফের। অসহায় অবস্থায় সেখানে তাকে এক ভারতীয় নাগরিক একটি গোদাম ঘরে নিয়ে রাখেন। এদিকে সৌদি থেকে ছেলের খবর না আসায় আমির উদ্দিন মামলায় অভিযুক্ত হুমায়ুন, মোস্তাব ও আলী আজাদের কাছে যান। কিন্তু তারা খোঁজ নিচ্ছে বলে টালবাহানা করে। এরমধ্যে কয়েক মাস গেলেও বৈধ কাগজপত্র পাননি শরিফ। সৌদিতে অবৈধভাবে পালিয়ে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার হন। সেখানে প্রায় ১৬ দিন জেল খেটে দেশে ফেরেন শরিফ।
প্রতারণার এই ঘটনায় শরিফ উদ্দিনের বাবা আমির উদ্দিন গত ৩১ অক্টোবর বড়লেখার পাখিয়ালা গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াদুদের ছেলে শাহজাহান কবির খোকন (৫০), তার ভাই হুমায়ুন আহমদ (৫২), একই গ্রামের মৃত কুটু মিয়ার ছেলে মোস্তাব উদ্দিন (৫৫) এবং জফরপুর গ্রামের মৃত সুরুজ আলীর ছেলে আলী আজাদ (৫৭)-কে আসামী করে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।