বিক্ষোভকারীরা দখল করেছে ইরাকের পার্লামেন্ট
বিডি ডেস্ক :
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জুলাই ২০২২, ১২:৪৪ মিনিটইরাকের পার্লামেন্ট ভবন দখলে নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এর আগে তারা নিরাপত্তা ব্যূহ ভেদ করে গ্রিন জোনে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে। প্রতিদ্বন্দি ব্লকের প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনয়নের বিরুদ্ধে শত শত বিক্ষোভকারী এতে অংশ নেয়। তাদের বেশির ভাগই ইরাকের শিয়া মতাবলম্বী নেতা মুকতাদা আল সদরের অনুসারী। তারা পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে তা তছনছ করে। অধিবেশন কক্ষে এমপিদের আসনে বসে অনেককে সিগারেট টানতে দেখা গেছে। অনেকে মোবাইলে সেলফি তুলছে। কেউ স্লোগান দিচ্ছে। যেন এক লঙ্কাকাণ্ড। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
এতে বলা হয়, ঘটনার সময় পার্লামেন্টে কোনো আইনপ্রণেতা বা এমপি উপস্থিত ছিলেন না।
এ সময়ে অত্যন্ত সুরক্ষিত গ্রিন জোনের নিরাপত্তা ভেদ করে বিক্ষোভকারীরা সেখানে প্রবেশ করে। এই গ্রিন জোন অত্যন্ত স্পর্শকাতর। কারণ এখানেই সরকারি বেশির ভাগ অফিস এবং কূটনৈতিক মিশন অবস্থিত।
ঘটনার সময় পার্লামেন্ট ভবনের ভিতরে শুধু নিরাপত্তা রক্ষীরা ছিলেন। তারা পরিস্থিতির শিকার হয়ে বিক্ষোভকারীদের প্রতিবাদ করার সুযোগ দেয়।
বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনয়ন দিয়েছে মোহাম্মদ শিয়া আল সুদানিকে। তিনি সাবেক মন্ত্রী ও প্রাদেশিক পরিষদের সাবেক গভর্নর। তাকে দেখা হয় ইরানপন্থি সমন্বয়ক ফ্রেমওয়ার্কের সমর্থক হিসেবে। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল কাদিমি বিক্ষোভকারীদেরকে অবিলম্বে গ্রিন জোন থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি সতর্কতা দিয়েছেন। বলেছেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি মিশনগুলোকে সুরক্ষিত রাখবে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী। যেকোনো রকম নিরাপত্তা ও শৃংখলার ক্ষতি প্রতিরোধ করবে তারা।
উল্লেখ্য, গত বছর অক্টোবরে ইরাকে পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়। তাতে ৩২৯ আসনের মধ্যে মুকতাদা আল সদরের ব্লক ৭৩ আসনে বিজয়ী হয়। এর মধ্য দিয়ে পার্লামেন্টে তারা সবচেয়ে বড় অংশ হয়ে ওঠে। ওই ভোটের পর নতুন সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা স্থবির হয়ে আছে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন আল সদর। বুধবার তার ছবি নিয়ে বিক্ষোভ করেছে জনতা। বিক্ষোভকারীরা সেখানে অবস্থান করবে না বেরিয়ে আসবে সেটা তাদের ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন আল সদর।
বিক্ষোভকারীরা সিমেন্টে তৈরি দেয়াল ভেঙে পার্লামেন্টে প্রবেশ করে। অনেকে ওই এলাকার গেটগুলোর নিরাপত্তা ভেদ করে প্রবেশ করে। এ সময় তাদেরকে বিরত রাখার জন্য জলকামান ব্যবহার করে দাঙ্গা পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা গ্রিন জোনের প্রধান অংশ দিয়ে হেঁটে ভিতরে প্রবেশ করে এবং কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী পালামেন্ট ভবনের বিভিন্ন দরজার বাইরে সমবেত হয়। এ সময় প্রধান ফটকের দরজাগুলোতে সমবেত হয় দাঙ্গা পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা গ্রিন জোনের দুটি প্রবেশ পথে সমবেত হয়। অনেকে সিমেন্টের দেয়াল বেয়ে ওঠেন। এ সময় তারা স্লোগান দিতে থাকেন- আল সুদানি, আউট।
আল সুদানিকে নির্বাচিত করেছে স্টেট অব ল’ নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নুরী আল মালিকি। তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগে পার্লামেন্টকে প্রথমেই একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে হবে।