কবি ফজলুল হক এবং আমার কিছু স্মৃতি —
শামীম লোদী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জুলাই ২০২২, ৫:১১ মিনিটগতকাল বিকেলে পঞ্চখন্ডের ভূমি পুত্র কবি ফজলুল হক আমাদের সকলের ফজলু ভাই চলে গেলেন না ফেরার দেশে। কবি ফজলুল হক নামের সাথে প্রথমে পরিচিত হই আশির দশকে। তিনি ছিলেন আশির দশকের একজন শক্তিমান কবি। আশির দশকে তরুন কবিদের মধ্যে সিলেটে যাদের নাম ডাক ছিল তারা হলেন , প্রয়াত মহি উদ্দীন শিরু, কবি তমিজ উদ্দীন লোদী , প্রয়াত আব্দুস সোবহান আরিফ এবং সদ্য প্রয়াত আমাদের ফজলু ভাই। সরাসরি ফজলুল ভাইয়ের সাথে পরিচিত হই নব্বইয়ের শেষের দিকে শিক্ষক ও সাংবাদিক বড় ভাই খালেদ সাইফুদ্দীন জাফরী ভাইয়ের মাধ্যমে। নব্বইয়ের শেষের দিকে খালেদ জাফরী সম্পাদনায় প্রকাশিত মোহাম্মদ আব্দুল মুছাওয়ীর লোদী স্মারক গ্রন্থে উনার একটা কবিতা দিয়েছিলেন এবং প্রকাশনা উৎসবের দিনও অনুষ্টানে উপস্হিত ছিলেন। সেদিনই খালেদ ভাই আমাকে পরিচয় করে দিয়েছিলেন। এর পর যতবার ই দেশে যেতাম ফজলু ভাইয়ের সাথে দেখা হত এবং অনেক গল্প করতেন এবং আমাকে খুবই স্নেহ করতেন। ২০০৮ সালে আমার প্রকাশিত বিয়ানীবাজারের হারিয়ে যাওয়া সোনার সন্তানেরা বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্টানে ও উপস্হিত ছিলেন এবং আমার বইয়ের উপর আলোচনাও করেছিলেন । পরে একদিন এক আড্ডায় বলেছিলেন শামীম তুমি যে কাজ করেছ এই রকম একটা বই আগে বিয়ানীবাজারে প্রকাশিত হওয়ার দরকার ছিল । আমরা যেটা করতে পারিনি তুমি প্রবাসে থেকে ও সেটা বিয়ানীবাজারের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেছ। পঞ্চখন্ডের এই গুণী ব্যক্তিদের কে তুমি এক মলাটের ভিতরে গেথে রেখেছ। এটাতে তুমি প্রমাণিত করে দিলে তোমার মধ্যে যে দেশ প্রেম আছে । ফজলু ভাই সরকারি একটা চাকুরী করতেন এবং সাদাসিদে জীবন অতিবাহিত করতেন । সে যাই হউক মাস খানেক আগেই খালেদ ভাইয়ের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে ফজলু ভাই খুবই অসুস্হ। তখনই আমি খালেদ ভাইকে জিজ্ঞেস করছিলাম উনি কি চিকিৎসা করতেছেন এবং সাথে এটাও খালেদ ভাইকে বলছিলাম যে আপনি একটু খোজ খবর নেন এবং উনার কোন সাহায্যের প্রয়োজন হলে আমি নিজে এবং কিছু ফান্ড রেইজ করে উনাকে দেওয়ার চেষ্টা করব।তখন খালেদ ভাই বললেন উনি ত এখন কথা বলতে পারেন না। শুধু ম্যাসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন । পরে ফজলু ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করেন এবং ফজলু ভাই যে ম্যাসেজ টি দিয়েছিলেন তাও আমি এই status এ আপলোড করলাম। এতে ই বুঝা গেল আসলেই ফজলু ভাই ছিলেন একজন আদর্শিক ও সৎ মানুষ । মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত আমি খালেদ ভাই ও ছোট ভাই মাসুমের কাজ থেকে কবির খোজ খবর নিয়েছি। উনি যে এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন ভাবতে পারি নাই।মনে করি ফজলুল ভাইয়ের সংস্পহে যারা গেছেন তারা বুঝতে পারবেন ফজলু ভাইদের মত মানুষ দরকার এই সমাজে। উনার লেখনীর মাধ্যমে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন পঞ্চখন্ডের এই জনপদের মানুষের কাছে।পরিশেষে এটাই বলব উনি এখন পরপারে আল্লাহ তালা যেন উনার সকল ভুল ক্রটি কে ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতবাসী করুন এবং উনার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্য্য দরার ক্ষমতা দেন এই দোয়া আমরা সকলেই করি। আমিন । লন্ডন ২৭|০৭|২০২২