মাধবপুরে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন ,স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুলাই ২০২২, ৯:২৭ মিনিট
হবিগঞ্জের মাধবপুরে যৌতুক লোভী স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে স্ত্রী। অপরদিকে মামলা তুলে নিতে স্ত্রীর ভাইকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় থানায় একটি সাধারন ডায়রি করা হয়েছে।মামলা সুত্রে জানা যায়, মাধবপুর পৌর শহরের কাপড় পট্রির কেশব বণিকের মেয়ের কেয়া বণিকের সঙ্গে ২০১৭ সালে বিয়ে হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পূর্ব মেড্ডা এলাকার অসিত বণিকের ছেলে রাহুল বণিকের
।
২০১৮ সালে ১৮ নভেম্বর এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ের কথা ঘোষনা করা হয়। বিয়ের সময় কেয়া বণিকের বাবা রাহুল কে সাধ্যমত যৌতুক প্রদান করে। ফ্রিজ, টিভি , কাঠের ফার্ণিচার ,অন্যান্য সামগ্রী সহ প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার দেয়।
বিয়ের পর কেয়া বণিক স্বামীর বাসায় যাওয়ার পর থেকে স্বামী ও স্বামীর পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য কেয়া কে মানসিক ও শাররীক নির্যাতন শুরু করে। তখন কেয়া বণিক তার বাবার বাড়ি থেকে ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে তার স্বামী রাহুল কে দেয়। পরবর্তীতে রাহুল কেয়া কে তার বাবার বাড়ি থেকে ৪০ লক্ষ টাকা এনে দিতে চাপ সৃষ্টি করে। ৪০ লক্ষ টাকা না দেওয়ায় রাহুল ও তার পরিবারের লোকজন কেয়া বণিকের উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
এক পর্যায়ে রাহুল ও তার পরিবারের লোকজন কেয়া বণিককে মেরে তার বাবার বাড়িতে রেখে চলে যায়। এ ঘটনায় কেয়া বণিক হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -০৩ আদালতে তার স্বামী রাহুল বণিক,তার শ^শুর অসিত বণিক, কাকা শ^শুর উত্তর বণিত ভোলা , শ^াশুড়ি সুচিত্রা বণিক কে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা করার পর রাহুল বণিক আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। রাহুল মামলা তুলে নিতে কেয়া বণিকের ভাই বিশাল বণিক কে এ বছরের ১৪ জুলাই মোবাইল ফোনে হুমকি দেয়। মামলা তুলে না নিলে রাহুল প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় কেয়া বণিকের ভাই বিশাল বণিক মাধবপুর থানায় একটি সাধারন ডায়রি করেন। এ ঘটনার পর থেকে কেয়া বণিক ও তার পরিবারের লোকজন নিরাপত্তা হীনতায় দিন কাটাচ্ছে। কেয়া বণিকের ভাই বিশাল বণিক জানান, রাহুল প্রতারনা করে তার বোন কে বিয়ে করেছে। তারা সরল বিশ^াসে রাহুল বণিকের সঙ্গে তার বোনের বিয়ে দেয়। কিন্তু বিয়ের পর জানতে পারে রাহুল বণিক অসিত বণিক কে বাবা হিসাবে পরিচয় দিলেও আসলে অসিত বলিক তার বাবা নয়। রাহুল বণিক আসলে ভারতীয় নাগরিক। তার প্রকৃত নাম অজিতেশ সেন। তার ভারতীয় পিতার নাম মিলন কান্তি সেন। তাদের ভারতীয় ঠিকানা হল ত্রিপুরা রাজ্যের পশ্চিম ত্রিপুরা এলাকার আগরতলা কলেজের নিকট জুগেন্দ্রগর গেদুমিয়া মসজিদের নিকট শিব নগর। সে তাদের সঙ্গে প্রতারনা করে বিয়ে করেছে। তাদের দাবি রাহুল বণিকের বাংলাদেশী নাগরিকত্ব বাতিল করা হোক। এবং কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।
কেয়া বণিকের বাবা কেশব বণিক জানান, আর কত মেয়ে যৌতুকের জন্য নির্যাতিত হবে। রাহুলের মত যৌতুক লোভী ছেলেদের কঠোর বিচার হলে যৌতুকের জন্য নির্যাতন কমে যাবে। রাহুল ও তার পরিবারের নির্যাতনে তার মেয়ে কেয়া বণিক এখন তার বাসায় থাকেন। মামলা করে এখন রাহুলের হুমকি ধমকিতে তারা নিরাপত্তা হীনতায় দিন কাটাচ্ছে।