বন্যার নাকাল যুক্তরাষ্ট্র ইরান ও আমিরাত।। মারা গেছেন ৫৩ জন
বিডি ডেস্ক :
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ জুলাই ২০২২, ২:০৭ মিনিটদুদিনে অপ্রত্যাশিত বানের পানিতে ভাসছে পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরান। ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে দেশটিতে মারা গেছেন অন্তত ৫৩ জন।
পাশাপাশি এই দু’দিনে বন্যায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকিতে মারা গেছে ১৬ জন। প্রায় একই সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব হানা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতেও।
অতিবৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যায় সাত প্রবাসীর মৃত্যুর খবর দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। তিন দেশেই বানের পানিতে নিখোঁজ রয়েছেন শতাধিক মানুষ। এএফপি।
ইরানের বন্যায় সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তরপূর্বে আল বুরজ পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত ফিরোজ কুহ এলাকা। সেখানে মারা গেছেন অন্তত ১০ জন।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জরুরি কার্যক্রমের প্রধান মেহদি ভালিপুর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, দুদিনের বন্যায় ইরানের ৩১টি প্রদেশের মধ্যে ১৮টির ৪০০ শহর ও গ্রাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যায় দেশটির অসংখ্য মহাসড়কও বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দেশটিতে এখনো উদ্ধার তৎপরতা চলছে। তেহরানের গভর্নর মোহসেন মানসুরি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, শুক্রবারও তেহরান প্রদেশের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে বন্যার তাণ্ডব দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি অঙ্গরাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টিপাতে রাস্তা, ঘরবাড়ি তলিয়ে যায় এবং নদীগুলোর পানি পাড় উপচে পড়ে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে তারা।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, কেন্টাকির অ্যাপলাচিন কয়লা খনি অঞ্চলের বাড়ি ও গাড়ি থেকে কয়েক ডজন লোককে উদ্ধারে পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা হেলিকপ্টার ও নৌকা ব্যবহার করে।
স্থানীয় গণমাধ্যমে আসা ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, বন্যার পানি বাড়ির ছাদ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে এবং রাস্তাগুলোকে নদীর মতো দেখাচ্ছে।
কেন্টাকির জিওলজিক্যাল সার্ভের পরিচালক অধ্যাপক উইলিয়াম হেইনবার্গ বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মহাকাব্যিক এসব বন্যার ঘটনা ঘটছে।’
শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার বলেন, ‘বন্যা এখনো শেষ হয়নি। আমরা অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু এখনো অনেক ঝুঁকি রয়ে গেছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রধান ডিয়েন ক্রিসওয়েলকে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো দেখে আসার পর বেসিয়ার জানান, তিনি বন্যার মাত্রা দেখে হতবাক হয়ে গেছেন।
অঙ্গরাজ্যটির রাজধানী ফ্রাঙ্কফুর্টের প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে ২২ হাজার বাসিন্দার শহর জ্যাকসনের অধিকাংশ ডুবে গেছে। তিনি বলেন, ‘শত শত বাড়ি, খেলার মাঠ, পার্ক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ধারণাতীতভাবে পানির তলায় চলে গেছে।’
বিরল এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভর করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। বৃহস্পতিবারের ভারি বৃষ্টিতে বন্যাকবলিত হয়েছে দেশটি। আমিরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, দেশজুড়ে হানা দেওয়া এ বন্যায় মারা যাওয়া সাত প্রবাসীর সবাই এশিয়া মহাদেশের।
বন্যার মতো দুর্যোগের কথা কখনো কল্পনাই করেনি সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ কারণে বন্যার পানি থেকে রক্ষা পাওয়ার যে অবকাঠামোর প্রয়োজন তা দেশটিতে নেই।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টুইটারে জানিয়েছে, বন্যায় রাস আল খাইমাহ, শারজাহ ও ফুজাইরাহ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফিল্ড ইউনিটগুলো এখনো আমিরাতে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।