প্রসঙ্গ : বিয়ানীবাজার পৌরসভার নয়াগ্রাম
এম.আতিকুর রহমান
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জুলাই ২০২২, ৬:৩৬ মিনিটলিখার পিছনে চাপা কষ্ট কারণ !
শুরুতে দু’টি কথা বলার প্রয়োজন অনুভব করছি জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে৷ ইতিহাস বলে—১৯৩৮ সালের ২৮শে মে তারিখে আসাম প্রদেশ এবং করিমগঞ্জ সাব-ডিভিশনের British empire তৎকালীন জলঢুপ থেকে থানা স্থানান্তরিত করে বর্তমান বিয়ানীবাজার কে থানা হিসাবে ঘোষনা দেন৷ আঞ্চলিক শব্দ বিয়ানে (সকালে) বাজার বসত বলে নামকরণ হয় বিয়ানীবাজার৷ এর পিছনে অনেক ইতিহাস আছে সে গুলো না হয় আপাতঃত থাক৷ প্রসঙ্গে আসার পূর্বে কিছু প্রসঙ্গ টানার যৌক্তিক কারণ হেতু প্রসঙ্গ টানছি৷ ঐতিহ্যবাহী বিয়ানীবাজার শহরের নিজস্ব নামে কোন মৌজা দলিল দস্তাদিতে আজো নেই৷ পুরো শহরের অধিকাংশ অংশ নয়াগ্রাম মৌজা এবং অল্প সংখ্যক অংশ ফতেপুর মৌজার অন্তর্ভুক্ত যা এখনো দলিলপত্রে প্রতিয়মান৷ কেন এই তথ্য উপস্থাপন (?) নিশ্চয়-ই পরবর্তী লাইন গুলোতে স্পষ্ট হবে৷ বিয়ানীবাজার জনপথ অসংখ্য পন্ডিত গুণীজন এবং জাতীয় পর্যায়ের ঐতিহাসিক ব্যাক্তিবর্গের সমন্বয়ে বৃহত্তর সিলেট তথা বাংলাদেশের আলোকবর্তীকা সম এক অঞ্চলের নাম৷ যার এক উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গুণী মানুষ নয়াগ্রামের ভুমি সন্তান৷
স্পষ্ট করতে উদাহরণ স্বরূপ যদি বলি— বীজ যতই ভাল হোক যদি উর্বর জমিতে রোপণ না করা হয় তাহলে চারা গজাবে না ; ফলন আশানুরূপ হবে না৷ অনুর্বর মাঠিতে ভাল বীজও অঙ্কুরোদগমে ব্যার্থ হয়ে নিরাশ করে৷ এই দৃষ্টিকোন থেকে বিয়ানীবাজারের নয়াগ্রাম এক উর্বর জায়গা৷ যেখানকার ভুমি সন্তানরা দীর্ঘ্যদিন থেকে নিরবে বিয়ানীবাজার বাসী কে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে শিক্ষা,রাজনীতি,চিকিৎসা এমন কি স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে বিয়ানীবাজার সদরে৷
কিন্তু!
পরিতাপের বিষয় এই নয়াগ্রামের গুণী মানুষগুলোর অর্জিত সম্মান বা নেতৃত্বের অংশীদার সমগ্র মানুষে ছড়িয়ে দিতে আমাদের আপত্ত্বি না থাকলেও বাঁধ সাধে তখন-ই ৷ যখন দেখি নয়াগ্রামের ভুমি সন্তানদের আইডেনডিটি (পরিচয় পত্র) ছিনতাই হয়ে যায়৷ যেমনঃ সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী তিন বারের সাংসদ বর্তমানে আওয়ামিলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার জননেতা নুরুল ইসলাম-নাহিদ সাহেবের ভোট নয়াগ্রামের ভোটার লিষ্টে দৃশ্যমান৷ অথচ সভা সেমিনারে তিনির উপস্থিতিতে কসবার কৃতি সন্তান হিসাবে উল্লেখ করা হয় তখন স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্নের উদ্রেক হয়৷ আমার প্রশ্ন নাহিদ সাহেব কে কেন নয়াগ্রামের ভুমি সন্তান হিসাবে উল্লেখ করা হবে না ? নয়তো সহজ করে বিয়ানীবাজারের কৃতি সন্তান,সিলেটের কৃতি সন্তান নয়তো বাংলাদেশের কৃতি সন্তান হিসাবে এড্রেস করা হোক৷ মূল ছেড়ে মধ্যখান থেকে কেন এড্রেস করা হবে (?) এটা কি নয়াগ্রাম কে অবমাননা করা নয়? বলতে তো অসুবিধা নাই,বলতে পারেন নাহিদ সাহেবের পুর্বপুরুষ কসবার অভিবাসী ছিলেন৷ একই ভাবে দীর্ঘ্য দিন নয়াগ্রামের প্রয়াত হাজী সহিব আলী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন তাঁকে এড্রেস করা হয় কসবা৷ বিলেতে নয়াগ্রামের হাবিবুর রহমান মানবাধিকার সংস্থার জয়েন্ট কাউন্সিল ফর ওয়েলফেয়ার এন্ড ইমিগ্রেশন (JCWI) ইউকে’র চিফ এক্সিকিউটিভ ছিলেন তাঁকে শ্রীধরার মোড়কে ! আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি নয়াগ্রামের সন্তান তপোধীর ভট্টাচার্য ভারতে নয়াগ্রামের প্রতিনিধিত্ব করছেন।সাবেক বিয়ানীবাজারের পৌর মেয়র তফজ্জুল হোসেন কে ফতেপুরের মলাটে মোড়া হয়৷ প্রতিথযশা শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মনজ্জির আলী ফতেপুরের ব্রান্ড৷ ডাঃ শাহিদ আহমদ কে মাথিউরার লেবেলে৷ বিয়ানীবাজার আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জনাব আরজদ আলী কে ছোটদেশের ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া৷ বিয়ানীবাজার আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এম এ খালিক (ইংলিশ খালিক) কে বড়দেশের সাদা কালো ফ্রেমে বেঁধে রাখা৷ সুনাম ধন্য শিক্ষক আব্দুর রহমান স্যার কে ফতেপুরের রঙ মাখানো হয়৷ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বোর্ডের সাবেক মহা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আলা উদ্দিন সাহেব কে বড়দেশের বিল বোর্ডে,১৯৬৬ সালের স্বাধীকার আন্দোলনের প্রথম শহীদ মনু মিয়া কে বড়দেশের লেবেল দেয়া এমনি করে নয়াগ্রামের সকল অর্জন ছিনতাই করে বিভিন্ন গ্রামের নিজস্ব ব্রান্ড বলে চালিয়ে দেয়া কি অশুভনীয় নয় ? নিজেরা যেখানে ফলাতে ব্যার্থ সেখানে অন্যের ফলন জোর পূর্বক দিন দুপুরে ছিনতাই করা আদর্শিক শিক্ষার অন্তরায়৷
এবার আসল প্রসঙ্গে আসা যাক৷ উপরে উল্লেখাত দুষ্ট খেলার পথ ধরে নয়াগ্রামের বঞ্চনা আর বঞ্চিতের দিক তুলে ধরার প্রয়াসে এতো সব বলা৷
বর্তমান মেয়র মহোদয় (স্নেহাস্পদ) কে সাধুবাদ কিছু সুন্দর আর দৃষ্টি নন্দন কাজের জন্য৷ সম্প্রতি চোখে পড়ার মত মেয়রের একটি কাজের প্রশংসা না করলে কার্পণ্যনতা হয়ে যায়৷ বিয়ানীবাজার পোষ্টঅফিস রোড ধরে বিয়ানীবাজার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এবং বিয়ানীবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পথের সংযোগ পথের প্রসস্থ করণের কাজ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় আবারো সাধুবাদ !
একই সাথে প্রশ্ন এবং জোর দাবি কেন বকুলের হোটেলের সামন দিয়ে নয়াগ্রামের কানেক্ট রোড (নয়াগ্রাম রোড) এর এমন বেহাল দশা ? যে রোড দিয়ে সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী তিন বারের সাংসদ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বারের বাড়ি৷ উল্লেখ্য সাবেক মন্ত্রী যত বার বিয়ানীবাজার আসেন ততবার-ই এই পথ ধরে নিজ বাড়িতে যান এবং রাত্রি যাপন করেন৷ কেন, এই রোড তো ভি আই পি রোডের মর্যাদা পাওয়ার কথা৷ অথচ অবাক কান্ড এই পথেই দুই রিক্সা ক্রস করতে পারে না !! এ রোডের প্রতি উদাসীনতা নয়াগ্রামের প্রতি অবহেলা না মানণীয় সাংসদের প্রতি অবমাননা তা আমরা নয়াগ্রামবাসীর বোধ গম্য নয়৷ আমি আজকে আমার facebook প্লাটফর্ম থেকে বিয়ানীবাজার বাসী বিশেষ করে তারুণ্যের অহংকার খ্যাত বিয়ানীবাজারের বর্তমান মেয়রের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি — বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির অহংকার সাবেক শিক্ষা মন্ত্রি,আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার সাংসদ জনাব নুরুল ইসলাম-নাহিদ এর প্রতি নুন্যতম সম্মান প্রদর্শণের বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ অনতি বিলম্বে জনাব নুরুল ইসলাম-নাহিদ এম পি’র বাড়িতে যাওয়ার নয়াগ্রাম রোড টি পোষ্টঅফিস রোডের ন্যায় প্রসস্ত করে সাবেক মন্ত্রীর প্রতি সম্মান দেখানো হোক এবং একই সাথে এই রোড কে ভি আই পি রোড নামকরনের মাধ্যমে আগামীর ইতিহাস রচিত হোক৷
কিছু অসাধু ভুমি খোর এই অতিব গুরুত্ব পুর্ণ রোড টি গীলে ফেলেছে৷ আমার বিশ্বাস এই কাজ যার হাত ধরে সম্পন্ন হবে আগামী নির্বাচনে নয়াগ্রামবাসীর সমর্থন আদায়ের তিনি-ই দাবিদার হবেন৷ আমার বিশ্বাস বর্তমান মেয়রের অগাধ সম্মান জননেতা নুরুল ইসলাম-নাহিদ এর প্রতি৷ সেই আবেগ থেকে যথাশীঘ্র সম্ভব আমাদের এই ন্যায্য দাবির প্রতি যথাযথ সম্মান দেখিয়ে ভি আই পি রোড প্রসস্থ করণে এগিয়ে আসবেন৷
নয়াগ্রামবাসীর পক্ষে
এম আতিকুর রহমান
লন্ডন