হত্যা রহস্য উদঘাটন...
যে কারণে শাবি শিক্ষার্থী বুলবুলকে হত্যা করা হয়
স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জুলাই ২০২২, ১১:৫০ মিনিট‘ছিনতাকারীদের সাথে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছুরিকাঘাতে খুন হন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ। এই হত্যার ঘটনায় বুলবুলের বান্ধবীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।’
বুধবার দুপুর ২টায় এসএমপি’র জালালাবাদ থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য জানালো সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ।
এ সময় উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে তাদেরকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের মধ্যে মো. আবুল হোসেন খুনের ঘটনায় জড়িত মর্মে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে স্বীকারোক্তি দিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত আরো দু’জনের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন। তার তথ্যের ভিত্তিতে কামরুল আহমদ ও মো. হাসানকে পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তারাও স্বীকারোক্তি দেয়। পরে কামরুলের বাড়ি থেকে নিহত বুলবুলের মোবাইল ফোন ও খুনে ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধার করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, শাবি’র গাজীকালু টিলা এলাকায় সোমবার অবস্থান করছিলেন আবুল হোসেনসহ চারজন। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে দু’জন চলে যায়। সন্ধ্যার পর বাকি দু’জনের সঙ্গে যোগ দেয় কামরুল। গাজীকালু এলাকায় সন্ধ্যার পর ঘুরতে যান বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ ও তার বান্ধবী মার্জিয়া ঊর্মি। ওই এলাকাটি নির্জন। তাদেরকে সেখানে পেয়ে আবুল হাসান, কামরুল আহমদ ও মো. হাসান মোবাইল ও টাকা দাবি করে। একপর্যায়ে বুলবুলের সাথে তাদের ধাক্কাধাক্কি ও ধস্তাধস্তি হয়। তখন তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
ছিনতাইকারীরা বুলবুলের মানিব্যাগ ও ঊর্মির মোবাইল, ব্যাগ কেন নেয়নি? এমন প্রশ্নের জবাবে আজবাহার আলী শেখ বলেন, ঊর্মিকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে বলেছে, ঘটনার সময় বুলবুলের কাছ থেকে একটু দূরে সরে গিয়েছিল। বুলবুলের মানিব্যাগও খোয়া যায়নি। গ্রেফতারকৃতরা বলেছে, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছুরিকাঘাতের পর রক্ত দেখে তারা ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর হাসপাতাল থেকে উর্মির চলে যাওয়া এবং কললিস্ট মুছে ফেলার বিষয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্কের কারণে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, উর্মি হাসপাতাল থেকে চলে যাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তাকে পাওয়া যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি, সে জানতে পারে নিহত বুলবুলের জানাজা ক্যাম্পাসে হবে। জানাজায় শরীক হতে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসে। তার চলে আসার পেছনে অপরাধমূলক কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। আমরা উর্মির মোবাইল ও কললিস্ট চেক করে দেখেছি। এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের কারও সাথে উর্মির মোবাইল যোগাযোগ ছিল না। তার মোবাইলে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়নি।
আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি : আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ হত্যাকাণ্ডের আসামি আবুল হোসেন। পরে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় জালালাবাদ থানা থেকে কড়া নিরাপত্তায় আবুল হোসেনকে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট সুমন ভূঁইয়ার আদালতে তোলে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দেবাশীষ দেব জানান, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আবুল হোসেন। পরে বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন।
এর আগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ হত্যা মামলায় আবুল হোসেনসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন- তারা হলেন, কামরুল ইসলাম (২২), আবুল হোসেন (১৮) ও মোহাম্মদ হাসান (১৮)। অপর দুই আসামিকে বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।