সিলেটের ওসমানীনগরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী পিতা পুত্রের মৃত্যু।। ঘুরপাক খাচ্ছে নানা প্রশ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জুলাই ২০২২, ৭:২৪ মিনিটসিলেটের ওসমানীনগরে এক পরিবারের ৫ প্রবাসীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের পর ২ জনের মৃত্যুর ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই বাসায় থাকা অন্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিষক্রিয়ায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ৫ জনের মধ্যে উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের ধিরারাই গ্রামের মৃত আবদুল জব্বারের ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫০) ও রফিকুলের ছোট ছেলে মাইকুল ইসলামের (১৬) মৃত্যু হয়েছে। রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুছনারা বেগম (৪৫), ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫) এবং মেয়ে সামিরা ইসলামকে (২০) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থাও গুরুতর বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে তাজপুর স্কুল রোডের একটি ভাড়া বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। বিষক্রিয়ার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। রফিকুল ইসলামের স্বজনরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন তিনি।
অসুস্থ ছেলে সাদিকুল ইসলামকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য গত ১২ই জুলাই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে দেশে এসে এক সপ্তাহ ঢাকায় থাকেন। চিকিৎসা শেষে গত ১৮ই জুলাই উপজেলার তাজপুর স্কুল রোড এলাকার চারতলা বিশিষ্ট একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় বাসা ভাড়া নেন।
সোমবার রাতের খাবার শেষে প্রবাসী রফিক মিয়া ও তার স্ত্রী সন্তানসহ ৫ জন একটি কক্ষে এবং রফিকুল ইসলামের শ্বশুর আনফর আলী, শাশুড়ি বদরুন্নেছা, শ্যালক দেলোয়ার হোসেন, শ্যালকের স্ত্রী শোভা বেগম ও মেয়ে সাবিলা বেগম (৮) অন্যান্য কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন।
সকালে বাসার সুস্থ স্বজনরা ডাকাডাকি করে প্রবাসী রফিকুল ইসলামসহ তার স্ত্রী-সন্তানদের সাড়া না পেয়ে ৯৯৯ নম্বরে কল করেন। খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে ওসমানীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কক্ষের দরজা ভেঙে রফিকুল ইসলামসহ তার স্ত্রী হুছনারা বেগম, ছেলে মাইকুল ইসলাম, সাদিকুল ইসলাম ও মেয়ে সামিয়া ইসলামকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম ও মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলামের শ্বশুর আনফর আলী, শাশুড়ি বদরুন্নেছা, শ্যালক দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী শোভা বেগমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ঘটনা রহস্য উৎঘাটন করতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, যে বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় প্রবাসীদের উদ্ধার করা হয়েছে সেই বাসায় ৩টি শয়ন কক্ষ, ১টি রান্নাঘর, ১টি খাবার কক্ষ রয়েছে। যে কক্ষে প্রবাসী পরিবারের ৫ জন ঘুমিয়েছিলেন কক্ষটির আসববাপত্র এলোমেলো অবস্থায় রয়েছে। ওই ভবনের অন্যান্য বাসায় থাকা কেউ ঘটনার বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা রায়হানা। এছাড়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এর দুটি টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে।