ছাতকে বন্যায় বিধ্বস্ত ৩শ কিলোমিটার সড়ক
বিডি ডেস্ক :
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জুলাই ২০২২, ১:০৯ মিনিটসম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় ছাতকের রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যার প্রবল স্রোতে অনেক পাকা সড়ক ভেঙে গিয়েছে। কোনো কোনো গ্রামীণ রাস্তার অস্তিত্বই নেই। মাটি সরে গিয়ে খালে পরিণত হয়েছে অনেক পাকা ও কাঁচা সড়ক।
বন্যার আগে যে এখানে পাকা সড়ক ছিল, তার বোঝার কোনো উপায়ই নেই। এ অবস্থা বিরাজ করছে অনেক সড়কে। বন্যার পানি নামলেও ছাতকের বিভিন্ন ইউনিয়নের সঙ্গে এখনো সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ছাতক অফিস সূত্রে জানা গেছে, এখানে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পাকা সড়ক বন্যায় বিধস্ত হয়েছে। গ্রামঞ্চলের অনেকগুলো কাঁচা সড়ক নিশ্চিহ্ন হয়েছে। বন্যায় এখানে রাস্তা-ঘাটের যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ছাতক-দোয়ারা বাজার সড়ক, নরশিংপুর, জাউয়া বাজার সড়ক, কৈতক-হায়দারপুর, জাউয়া-ভমভমি, জালালপুর-লামারসুলগঞ্জ, গোবিন্দগঞ্জ-লাকেশ্বর, কালারুকা বাজার-আরতানপুর সড়কে এলাকার লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা মাটি ভরাট করে কিছুটা যান চলাচলের উপযোগী করেছেন।
এদিকে, যান চলাচল বন্ধ রয়েছে ছাতক-দোহালিয়া-সুনামগঞ্জ সড়ক, শ্যামপাড়া-কান্দিগাঁও, মিত্রগাঁও-বঙ্গবন্ধু সড়ক, বুরাইয়া-বসন্তপুর, চরমহল্লা-চানপুর, নোয়ারাই-চৌমুহনী বাজার, মাদরাসা বাজার-নোয়াকোট, বড়কাপন-শ্রীপুর, তাজপুর-রামপুর, ঝাওয়া, হাসনাবাদ, ঝামক, কালারুকা-তাজপুর, বাউশাবাজারসহ অসংখ্য সড়কে।
এছাড়া সম্প্রতি বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত সিলেট-ছাতক বাজার রেলপথের ছাতক-আফজলাবাদ পর্যন্ত রেললাইনের প্রায় ১৩ কিলোমিটার লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। প্রাচীনতম রেলপথের মাটি ও পাথর ভেসে গিয়ে ঝুলে আছে লাইন ও স্লিপার। লাইনের বিভিন্ন অংশে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বন্যায় তছনছ হওয়া পুরনো রেলপথটি মেরামত করে পুনরায় চালুর দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষ।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ ছাতকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুম আহমেদ সিদ্দিকী জানান, ছাতক-দোয়ারাবাজারে সওজ বিভাগের ১২০ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬০ কিলোমিটার সড়ক। বন্যায় সড়ক ভেঙে প্রায় ৭৫ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ছাতক উপজেলা প্রকৌশলী আফছর আহমেদ জানান, ছাতকে বন্যায় এলজিইডির অধীনে ২০০ কিলোমিটার পাকা সড়ক কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেঝে ভেঙে গিয়েছে। এতে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে। তিনি আরো জানান, চার-পাঁচটি সড়ক সাময়িকভাবে চলনসই করতে জরুরি মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সকল রাস্তার তালিকা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, বন্যায় ছাতক উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে প্রচুর অর্থ ও সময়ের প্রয়োজন।